আমি এক হতভাগা পাবলিক 

রাজনীতির ভীরে আজ হারিয়ে যেতে বসেছি আমি। ক্ষীণ হয়ে এসেছে আমার সম্প্রদায়। হাটে-মাঠে-ঘাটে যেখানে যাই, সেখানেই দেখি সব রাজনীতিবিদ। আমি আমার মনকে প্রশ্ন করি হাজার বার। আমার আমজনতারা কোথায়? মন আমার প্রতিবার ব্যর্থ হয়ে যায় উত্তর গুলো দিতে। কোনো পেশাতেই খুঁজে পাওয়া যায় না আমজনতাকে।

শুধু আমজনতা হারিয়ে যায় নি। হারিয়ে গেছে পেশাদারি স্বতঃস্ফূর্ত নেতৃত্ব। পেশাদারি নেতৃত্ব চলে কোনো না কোনো রাজনীতির ইশারা-ঈঙ্গিতে। রাজনীতির ছায়াতলে স্থান দখলের প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে আপন চরিত্রকেও হারিয়ে ফেলেন অনেকেই। আমরা এমন একটা স্তরে পৌঁছে গেছি, যেখানে কেউই সাধারন নাগরিক হয়ে বাঁচতে চাই না। সবাই সবার নেতৃত্ব দিতে চাই। প্রতিটি শ্রেণি পেশার মানুষের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে গেছে রাজকীয় নীতি।

এখন আসা যাক আমি কেন একজন হতভাগা। আসলে এই কথাটি বলার অনেক কারণ আমি নিজেই খুঁজে পেয়েছি। সমাজে আমার মত যারা হতভাগা রয়েছেন তারাও কিন্তু খুঁজলে পেয়ে যাবেন। তবে আমি বিশদ বলতে গেলে অনেকেই আবার নিজেকে হতভাগা বলে দাবী করবেন। তবে এটাও বলে রাখি, সবাই হতভাগা পাবলিক নয়। অনেকেই সৌভাগ্যবান হয়েও নিজেকে হতভাগার সারিতে দাঁড় করাতে চান। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আমজনতাকে নিয়ে তামাশা করবেন না। আমজনতা হতে অনেক ধৈর্য্যের প্রয়োজন হয়। মুখ বুজে সহ্য করতে হয় অনেক কষ্ট। হৃদয়ে পাহাড় সমান চাপা বেদনা নিয়ে চলতে হয় কাঁটা ভরা পথ।

সু-শিক্ষিতের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস‌ পেলেও প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে শিক্ষিতের হার। কারও ভালো-মন্দ না বুঝলেও নিজের ভালো-মন্দ বোঝার ক্ষমতা রাখছি আমরা। এভাবে আর কতদিন চলা যায়। আমরা কেন বুঝতে চাই না। সমাজের অমঙ্গল তো ব্যাক্তি জীবনেও এসে হানা দিতে সময় লাগবে না। আমরা যদি সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে না পারি। তাহলে অন্ধকার জগতে নিমজ্জিত হতে হবে অবশ্যই। সর্বদা নিজের ভালো কামনা করতে গিয়ে বলির পাঁঠা হয়ে যাচ্ছি অজান্তেই।  সমাজের এই অসামঞ্জস্যতাকে পেছনে ফেলে আগামীর জন্য ভালো কিছু করতে হবে। সমাজের এই গতিপথ ফিরিয়ে আনতে নিজেদের গতিপথ পরিবর্তন করতে হবে।

Comments

Popular posts from this blog

সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের ৫ম মৃত্যু বার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি